ফেরা

ক্ষুধা (সেপ্টেম্বর ২০১১)

Shahitaz Aktar Nupur
  • ৩৭
  • ৭৪
ভট ভট শব্দে সি.এন.জি টা এসে থামল কালো গেটওয়ালা পাঁচতলা বাড়িটার সামনে। ছোট্ট দিহান অনেকক্ষণ হল পায়চারি করছে বলা যায় সকাল থেকেই তার অস্থিরতা বেড়েছে, সে একবার গেট আর একবার ঘর করছে। আজ গ্রাম থেকে তার দাদুর আসার কথা। এতক্ষণে তার অপেক্ষার পালা শেষ হল। সি.এন.জি থেকে নামলেন রহমান সাহেব এবং তাঁর সহধর্মিনী রাহেলা বেগম। দিহান দৌড়ে এসে দাদু বলে রহমান সাহেবের গলা জড়িয়ে ধরলো। রহমান সাহেবের একমাত্র নাতি এটি। তার এক ছেলে এক মেয়ে। মেয়ের ঘরে কোন বাচ্চাকাচ্চা নেই। একমাত্র ছেলের ঘরের একমাত্র সম্বল এই নাতি দিহান। দিহানের বাবা ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করে। তাদের বাসাটা ঢাকা শহরের শুক্রাবাদে। তিন রূমের এক বাসা, দুইটা বেডরূম, একটা ড্রইং, ডাইনিং। ছোট্ট সাজানো গোছানো সংসার দিহানের বাবা-মায়ের। দিহান বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান, চোখের মণি। মা এনজিও কর্মী হওয়ার কারণে তাকে কাজের বুয়ার কাছেই থাকতে হয়। দিহান কে স্কুলে নেওয়া, গোসল করানো, খাবার খাওয়ানো, বিকেলে খেলতে নিয়ে যাওয়া সবই করে কাজের বুয়া। সেজন্য অবশ্য দিহানের বাবা-মাকে মোটা মাইনে গুনতে হয় মাস শেষে। বাসায় লোকজন যত কম দিহানের মা তত খুশী। চাকরীজীবি হওয়ার কারণে তিনি উটকো ঝামেলা পছন্দ করেন না। আর এটা জেনেই রহমান সাহেব নিতান্ত অনিচ্ছাসত্ত্বেও সহধর্মিনীকে নিয়ে ঢাকায় অনেক সংকোচ নিয়ে এসেছেন। কিন্তু এই এক মুহুর্তে দিহানকে কাছে পেয়ে বুড়ো-বুড়ি দুজনেই যেন সব ভুলে স্বর্গ হাতে পেলেন। আর দিহানও সব ভুলে দাদা-দাদীকে পেয়ে তার গল্পের ঝুড়ি খুলে নিয়ে বসল। পিউ এসে সি.এন.জি থেকে ব্যাগগুলো বের করে ঘরে নিয়ে ঢুকাতে লাগল। আর দিহানের সব নালিশ যেন পিউকে ঘিরেই। পিউ আজকে তাকে বার্গার খেতে দেয়নি, স্কুলে যাবার সময় কতটা হাঁটিয়েছে, গোসল করার সময় বেশি পানি নিতে দেয়নি এই সব হাজারো টুকরো টুকরো নালিশ তার ঝুড়ি ভর্তি। দিহানের নালিশ শুনে বৃদ্ধ মানুষ দুজন হেসেই খুন। একটু পরে পিউ দিহানকে সাথে নিয়ে সামনের মাঠে খেলতে যায় যেখানে দিহান প্রতিদিন দু'ঘন্টা ক্রিকেট প্রাকটিস করে।

ঘড়িতে ঢং ঢং করে বিকাল ছয়টার অ্যালার্ম বাজে। রহমান সাহেব হাত মুখ ধুয়ে সোফায় হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে বসে আছেন। কলিং বেলের আওয়াজ শোনা যায়। একবার, দুইবার, তিনবার। রাহেলা বেগম ব্যতিব্যস্ত হয়ে দরজা খোলার জন্য যান। গেট থেকে তখন শারমিনের গলার জোরালো আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে- 'পিউ, এই পিউ এতবার বেল বাজালাম, কানে যায় না। অসভ্য মেয়ে কোথাকার। থাকিস কোথায়?' শারমিন রহমান সাহেবের একমাত্র ছেলের বউ। বউমার গলার এত জোরালো আওয়াজে রহমান সাহেব ধড়ফড় করে উঠে বসেন। রাহেলা বেগম স্মিত হেসে বললেন এত প্রশ্ন একসাথে করলে কোনটা রেখে কোনটার উত্তর দেব? আগে ঘরে ঢোক তারপর সব জানা যাবে। শারমিন ভেতরে ঢুকে শ্বশুরকে দেখে জিজ্ঞাসা করে বাবা আপনার শরীর এখন কেমন? রহমান সাহেব বলেন এই তো মা, আর শরীর! বুড়া হয়ে গেছে কখন থেমে যায় কে জানে! তুমি যাও ফ্রেশ হয়ে এস। শারমিন চলে যায়। রহমান সাহেব মনে করার চেষ্টা করেন আগে শ্বশুরের সামনে শাড়ি পরে ঘোমটা মাথায় দিয়ে ছেলে বৌ হাজির হতো। পায়ে হাত দিয়ে সালাম করত। এখন আধুনিক যুগ। এখন বোধহয় এই রেওয়াজগুলোই উঠে গেছে।

শারমিন বাথরূম থেকে বের হয়ে খাবার খেতে ডাইনিং-এ বসে। একটু পরে পিউ দিহান কে নিয়ে ফিরে আসে। পিউ ঘরে ঢুকলে শারমিন তাকে বলে কিরে দীদা-দাদুকে দুপুরের খাবার খেতে দিয়েছিলি খেতে? পিউ হঁ্যা সূচক মাথা নাড়ে। শারমিন আবার বলে দিহানকে হাত-মুখ ধুইয়ে জামা-কাপড় বদলে দে। আর এই ব্যাগগুলো নিয়ে বারান্দায় রেখে আয়। এত বড় বড় ব্যাগগুলো ঘরের মধ্যে রাখলে দেখতে খারাপ দেখায়। পিউ বলে এগুলোতে দীদা-দাদুর। ওগুলো বাইরে রাখলে ওদের জিনিসপত্র নষ্ট হবে। শারমিনের গলায় বিরক্তি এবং ক্রোধ দুটো একই সঙ্গে প্রকাশ পায়। 'নষ্ট হলে হোক, তোকে যেটা করতে বলেছি সেটাই কর। তোর কাছ থেকে আমাকে শিখতে হবে নাকি কি করব আর না করব না।' পিউ মাথা নিচু করে ব্যাগগুলো টানতে টানতে ভেতরের বারান্দায় নিয়ে যায়। ড্রইংরূমে রহমান সাহেব আহত চোখে স্ত্রী রাহেলা বেগমের দিকে তাকান। দিহান তখন ব্যস্ত তার কম্পিউটারে গেমস খেলতে।

রাতে রাকিব বাসায় ফিরে। রাকিব রহমান সাহেবের একমাত্র ছেলে। ড্রইংরূমে বসে পায়ের জুতা খুলতে খুলতে সে বাবাকে জিজ্ঞাসা করে হঠাৎ কী মনে করে ঢাকায় এলে? রহমান সাহেব যেন আরো সংকুচিত হয়ে যান নিজের কাছে। তিনি ইতস্তত করতে থাকেন। রাহেলা বেগম বলেন তোর বাবার শরীরটা খুব একটা ভালো নয়। চোয়ালের পাশে কানের নিচে একটা টিউমার হয়েছে। তাই ডাক্তার দেখাতে এলাম। 'কেন ওখানে কী ভাল ডাক্তার ছিল না? কিছু হলেই ঢাকায় চলে আসতে হবে?'- রাকিবের বিরক্তি প্রকাশ পায়। রাহেলা বেগম মাথা নিচু করে ছেলের প্রশ্নের জবাব দেন। রাকিব কিছু না বলে ভেতরের রূমে চলে যায়। ছেলের কাছে যে বয়স্ক বাবা-মা বোঝা সেটা যেন হাড়ে হাড়ে টের পান মানুষ দু'জন। রহমান সাহেব স্ত্রীর পিঠে হাত রাখেন- 'ওর কোন দোষ নেই রাহেলা। আমি অক্ষম বাবা। ওকে পারিনি স্বচ্ছলতা আর জীবনের বিলাসিতা এনে দিতে। ওর সুখের জীবনে ভাগ বসানোর কোন অধিকার আমাদের নেই।' রাহেলা বেগম মাথা নিচু করে রাখেন। তার দু\'চোখে জল ছলছল করছে। কিন্তু এ জল তিনি কিছুতেই তার স্বামীকে দেখাবেন না, কিছুতেই না।

ড্রইংরূমে ছোট্ট একটা বিছানায় রহমান সাহেব শুয়ে আছেন। পাশেই রাহেলা বেগম এশার নামাজ পড়ছেন। রহমান সাহেব কে নস্টালজিয়ায় পেয়ে বসে। তার মন চলে যায় দূর অতীতে। ঘোলাটে চোখে তিনি তাকিয়ে থাকেন শূণ্যের দিকে যেখানে তার মনের সেলুলয়েডের পর্দায় একের পর এক দৃশ্যান্তর ঘটে। ছোটখাট একটা সরকারী চাকুরী করতেন তিনি। সারা জীবন বেতন পেয়েছেন তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা। সেটা দিয়েই রাকিব আর রোজা তার দুই ছেলে- মেয়েকে মানুষ করেছেন। বিলাসিতা কাকে বলে সেটা কোনদিন বোঝেন নি। যদিও সরকারী চাকুরে ছিলেন ঘুষ খাননি কখনো। ছেলে- মেয়ে দুটোকেই মাস্টার্স পাশ করিয়েছেন। এটুকুই যা স্বার্থকতা। ছেলেকে কোনদিন পছন্দমতো জামা-কাপড় কিনে দিতে পারেন নি। পারেন নি চাহিদা মতো বন্ধুদের সাথে তাল মিলিয়ে চলার মতো স্ট্যাটাস এনে দিতে। তার উপরে নিজের দু'তিনটা ভাই- বোনকে মানুষ করে বিয়ে দেওয়ার ব্যাপারটাও রহমান সাহেবকে নিতে হয়েছে। যদিও সহধর্মিনী রাহেলা কোনদিন এসব নিয়ে কোন কথা বলেন নি তারপরও ছেলের কাছে তিনি বিরাগভাজন হয়েছেন।

হঠাৎ ওপাশের রূম থেকে চিৎকার শোনা যায়। রহমান সাহেবের চিন্তায় ছেদ পড়ে। শারমিন চিৎকার করছে পিউ, এই পিউ এদিকে আয়। দিহান কে বিছানা রেডি করে দে। ও ঘুমাবে। পিউ এর গলা শোনা যায়। ও আজ আপনাদের সাথে ঘুমাবে। দীদা-দাদু ঘুমাবে ওর ঘরে। রাকিব খেঁকিয়ে ওঠে। তোকে যা করতে বলা হয়েছে কর। দিহানকে ওর বিছানা রেডি করে দে। বাবা-মা ড্রইংরূমে ঘুমাবে। পিউ অসহায় গলায় বলে ফ্লোরে? হঁ্যা, রাকিব উত্তর করে।

এক সপ্তাহ কেটে যায়। কিন্তু রাকিবের সময় হয় না বাবা কে ডাক্তারের কাছে নেওয়ার। রাহেলা বেগম সাহস সঞ্চার করে ছেলেকে জিজ্ঞাসা করেন তোর বাবাকে ডাক্তারের কাছে নিবি না? রাকিব বেশ অবজ্ঞাভরে জিজ্ঞাসা করে টাকা-পয়সা এনেছ কিছু? আমার পক্ষে টাকা-পয়সা খরচ করা সম্ভব না। রহমান সাহেব বলেন হঁ্যা আমার কাছে টাকা-পয়সা আছে। তুই ডাক্তার কে অ্যাপয়েন্টমেন্ট দিয়ে আয়। ঠিক আছে আমি অফিস থেকে ডাক্তারকে এ্যাপয়েন্টমেন্ট দিয়ে আসব আসার সময়। আর আমি রোজাকে ফোন করেছি। ও তোমাদের নিয়ে যাবে। আমার এখানে দু'জন মানুষের খরচ আমার জন্য বেশি। তাছাড়া ওখান থেকে কিছুদিন বেরিয়ে আসলে তোমাদেরও ভাল লাগবে। আমি ডাক্তারের কাছে এ্যাপয়েন্টমেন্ট দিয়ে রাখব। রোজা তোমাদের ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবে। রাহেলা বেগম ছেলেকে আশ্বস্ত করে আচ্ছা বাবা, তুই যা বলবি তাই হবে।

পরদিন রোজা এসে বাবা-মাকে তার শ্যামলীর বাসায় নিয়ে যায়। শ্যামলীতে তার পাঁচ রূমের বিশাল এক ফ্ল্যাট। জামাই ব্যবসায়ী। মেয়ে-জামাইয়ের সংসারে থাকতে রহমান সাহেব এবং রাহেলা বেগমের অস্বস্তি কয়েকগুণ বেড়ে যায়। মেয়ে রোজার যত্ন-আত্তির কোন শেষ নেই। সবসময় বাবা-মাকে কি খাওয়াবে, বাবা-মার কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা সেটা সে খেয়াল রাখে। সজলের সাথে অবশ্য দেখাই হয় না। রাহেলা বেগম মেয়েকে ডেকে জিজ্ঞাসা করেন আড়ালে কি রে সজলের সাথে তো একদিনও দেখা হলো না। ও কখন আসে কখন যায় কিছুই তো জানি না। আজ তিন-চারদিন হল আমরা দু'জন আসলাম অথচ সজল যে দেখা করল না। রোজার চোখে-মুখে এক মুহুর্তের জন্য অসহায়ত্বের ছাপ ফুটে উঠল। কিন্তু সে নিজেকে সামলে নেয়। সে মাকে আশ্বস্ত করে মা সজল একটু বেশি ব্যস্ত ব্যবসা নিয়ে। তোমরা থাকো। ও বলেছে শুক্রবার তোমাদের সঙ্গে একসাথে রাতের খাবার খাবে। রাহেলা বেগম মেয়ের দিকে নির্বাক তাকিয়ে থাকেন। রোজা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য মার সামনে থেকে চলে যায়।

দু'দিন পর। রাতের বেলা হঠাৎ কিসের যেন শব্দে রাহেলা বেগমের ঘুম ভেঙ্গে যায়। রহমান সাহেব কে ডাক্তার ওষুধ দিয়েছেন। তাতে করে শরীর এখন একটু ভাল। এছাড়াও কিছু টেস্ট করিয়েছেন। টেস্টগুলো করাতে পাঁচ-সাত হাজার টাকা দরকার। রাহেলা বেগম অনেক চিন্তা করে দেখেছেন, রাকিবকেও টাকা পাঠাতে বলেছেন। কিন্তু ছেলে কোন খবর দেয় নাই। তাদের কাছে যে টাকা আছে তা দিয়ে টেস্টগুলো হয়ে যাবে কিন্তু ওষুধ কেনা বাড়ি ফেরা ঝামেলা হয়ে যাবে। রাহেলা বেগম ভাবেন মানুষটা ঘুমাচ্ছে তাকে ঘুমাতে দেয়া উচিত। চিৎকারটা কোত্থেকে আসছে সেটা দেখা দরকার। তিনি সনর্্তপনে বিছানা থেকে নামেন। চশমাটা হাতে নেন, মোবাইলটা টিপ দিয়ে দেখেন রাত একটা বাজে। এত রাতে কোত্থেকে শব্দ আসছে সেটা বোঝা দরকার। কোন রকম শব্দ না করে তিনি আস্তে দরজা খুলে বাইরে বের হন। মেয়ের ঘর থেকেই শব্দটা আসছে। ফিরে আসতে চান তিনি। মেয়ে-জামাইয়ের ভেতরের কোন বিষয়ের ঝামেলায় তিনি জড়াতে চান না। পেছন ফিরতে গিয়েও তিনি থমকে যান।

'চুপ একদম চুপ। কোন কথা বের করবি না মুখ দিয়ে। টাকা কি তোর বাপে দিয়ে গেছে যে তুই চাইলেই তোকে টাকা দেওয়া লাগবে? কি করবি টাকা দিয়ে? ওই বুড়োটার ডাক্তার দেখাবি? যা রাস্তায় যা শরীর বেইচে টাকা আন। সজলের ক্রদ্ধ কণ্ঠ শোনা গেল।

দোহাই তোমার। পাশের ঘরে বাবা-মা রয়েছে। একটু আস্তে কথা বল। বাবা-মা শুনলে কি বলবে?

'চুপ করব? আমি চুপ করব? আমার ঘর আর আমি চুপ করব আর কথা বলবি ফকিরনির পুত তুই? গলা টিপে মেরে ফেলে রাখব। যাবে কবে তোর হাড়-হাভাতে ঐ বুড়ো-বুড়ি? এক পয়সা দেয় নাই বিয়ের সময়। মানুষ কত কি পায় বিয়ে করলে আর আমি! পঙ্গপাল টানতাছি। আমার ঘরের ভাতের দাম আছে। কালকেই তোর ঐ বুড়ো বাপ-মা কে বের করবি আমার বাসা থেকে। আমার বাড়ির ভাত এত সস্তা হয় নাই। আর যদি আমি জানতে পারি তুই একটাকা দিছস তাইলে হারামজাদী তোরে আমি তালাক দেব। বুঝলি ফকিরনীর পুত। সজলের কণ্ঠস্বর আরো জোরালো হতে থাকে।

'আমি তোমার পায়ে ধরি। চুপ কর তুমি। দোহাই তোমার এভাবে বলো না। ওরা শুনতে পেলে খুব কষ্ট পাবে। তুমি কাল ওদের সঙ্গে দেখা কর। আমি পরশু দিন ভাইয়ের বাসায় ওদেরকে পাঠিয়ে দেব।' রোজার আহত অশ্রুসিক্ত কণ্ঠ শোনা যায়।

'ছাড়! পা ছাড়! এক লাত্থি মেরে ফেলায় দিব শুয়োরের বাচ্চা।'-সজলের উন্মত্ত ক্রোধ শোনা যায়।

রাহেলা বেগম কোনরকমে টলতে টলতে বিছানায় ফিরে আসেন। তিনি চোখ মুছতে মুছতে ঘরে ঢোকেন। অসুস্থ মানুষটা শুনতে পারলে খুব কষ্ট পাবে। তিনি ঘরে ঢোকেন।

ঘরে ঢুকেই তিনি চমকে উঠলেন। রহমান সাহেব কখন যেন বিছানায় উঠে বসেছেন। যেন কিছুই হয়নি এমন ভান করে রাহেলা বেগম স্বামীর পাশে শুয়ে পড়লেন। কিন্তু তিনি লাইট জ্বালালেই দেখতে পেতেন রহমান সাহেবের অসুস্থ চেহারায় কী এক অব্যক্ত যন্ত্রণা ফুটে উঠেছে।

শুক্রবার রাতের বেলা সবাই ডাইনিং টেবিলে খেতে বসেছে। রোজা সবাইকে খাবার এগিয়ে দিচ্ছে। সজল রহমান সাহেবকে উদ্দেশ্যে করে বলে তা কতদিনের ঢাকায় এলেন বাবা? এই তো চলে যাব বলে ভাবছি রহমান সাহেব বলেন।

এত তাড়াতাড়ি চলে যাবেন কেন? মেয়ের বাসায় আসলেন দু'দিন থাকেন। ভাল-মন্দ খাওয়া-দাওয়া করেন। আর কোনদিন আসতে পারেন কি না পারেন। রিপোর্টে যা দেখলাম তাতে এই বেলা একটু ভাল-মন্দ বেশি করে খাইয়ে দিও রোজা তোমার বাবা-মাকে। আর কোনদিন মেয়ের বাড়ির খানা মুখে তোলার সৌভাগ্য হয় কি না হয়?
আহ্! তুমি থামবে- রোজা মৃদু ধমক দেয় স্বামীকে। না, না ওকে বলতে দাও রোজা-রহমান সাহেব বলেন।

ও আপনি তো বোধহয় জানেন না যে আপনার ক্যান্সার। আপনাকে তো বোধহয় ওরা বলেনি। রহমান সাহেবের হঠাৎ বুকের বামদিকে ব্যাথা শুরু হয়ে যায়। রোজা আর রাহেলা বেগম দৌড়ে এসে তাকে ধরে। সজল নির্বিকার চিত্তে খাওয়া শেষ করে তার ঘরের দিকে চলে যায়।

রহমান সাহেব কে নিয়ে ঘরে শুইয়ে দেওয়া হয়। ফ্যানটা অন করে দেয় রোজা। তারপর ঘর থেকে ছুটে বের হয়ে যায়। আহত বাঘের মতো রোজা ঝাপিয়ে পড়ে সজলের উপর। তোমার মতো অমানুষ আমি এই পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি দেখিনি। সজলের মুখে বিদ্রুপের হাসি।

পরদিন সকাল বেলা রোজা বাবা-মাকে ট্যাঙ্ িডেকে দেয়। মা কে বলে মা মনে করো তোমার মেয়ে মারা গেছে। আমি পারলাম না বাবার জন্য কিছু করতে। আমি কিছুই করতে পারলাম না। রাহেলা বেগম মেয়ের মাথায় হাত রাখেন। রোজার চোখে অশ্রু। রহমান সাহেব রোজার কপালে একটা চুমু খেয়ে মাথায় হাত রেখে বলেন, মা তুমি সুখি হও। রোজা দৌড়ে ঘরে চলে যায় চোখের অশ্রু আড়াল করার জন্য।

সি.এন.জি এসে রাকিবের বাসার সামনে তার বাবা-মাকে নামিয়ে দেয়। দিহান এসে দিদার কোলে চড়ে বসে। এই পৃথিবীতে বুড়ো-বুড়ির ছোট্ট আশ্রয়স্থল এই দিহান।

রাতে রাকিব বাসায় ফিরে। ঘরে ঢুকে বাবা-মাকে দেখে সে কিছুটা বিরক্ত হয়। মা কে বলে কি হল তোমার আদরের মেয়ে-জামাই এক সপ্তাহও রাখল না? শারমিন এসে রাকিব কে ঘরের ভেতরে পাঠায়। বাবা-মাকে খেতে ডাকে।

রহমান সাহেবের শরীর আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। সারারাত চিৎকার করেন তিনি যন্ত্রণায়। তার সমস্ত শরীরে পোকা ঘুরে বেড়ায় মাংসের ভেতরে। রাহেলা বেগম একা রাত জেগে স্বামীর পাশে বসে কাপড় গরম করে আগুন সেঁক দেন। যন্ত্রণা কিছুটা করে তাতে। ডাক্তার বলেছে কেমো দিতে। দেশের বাইরে নিয়ে যেতে পারলে ভাল হয়। ডাক্তারের কাছে দৌড়াদৌড়ি যা করার রোজাই করে। এর মধ্যে সজলের কথা অগ্রাহ্য করে হলেও প্রতিদিন রোজা একবার এসে বাবাকে দেখে যায়। এরই মধ্যে বাড়ির জায়গা-জমি অনেকটা বিক্রি করা হয়ে গেছে। ইন্ডিয়া নিতে গেলে আরও অনেক টাকার দরকার।

সেদিন রাতের বেলা রাকিব বাসায় এলে খাবার টেবিলে রাহেলা বেগম ছেলেকে বলে তোর বাবাকে ইন্ডিয়া নেওয়ার দরকার। ওনার শরীর দিন দিন খারাপ হচ্ছে। তুই কিছু একটা ব্যবস্থা কর বাবা। আমি কি ব্যবস্থা করব? আমি এতটাকা কোথায় পাব? আমার একটা ছেলে আছে। তার একটা ভবিষ্যত আছে না! তোমাদের পেছনে এত টাকা খরচ করলে আমার সংসার চলবে কি করে? নিতান্ত অবজ্ঞাভরে রাকিব কথাগুলো বলে। রাহেলা বেগম বলেন আমি তি তোকে পেটে ধরিনি? তোর বাবা কি তোকে মানুষ করেনি? দ্যাখো মা, যে মানুষ তোমরা করেছ তা দিয়ে আমার নিজের সংসার চলে। তার বাইরে আমি কিছু করতে পারব না। কথাগুলো শেষ করে রাকিব উঠে চলে যায়।

শারমিন স্বামীকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য এগিয়ে আসে। ঠিক আছে মা সজল অনেক বড় ব্যবসা করে। রোজাকে বলেন কিছু দিতে, আর বাড়ির জায়গা যা বাকি আছে তা বিক্রি করে দেন। বাকি কিছু দরকার হলে সেটা আপনার ছেলে দেবে। রাহেলা বেগম ইতস্তত করে বউমার কথার জবাবে কিছু একটা বলতে চাইছিলেন কিন্তু থমকে যান স্বামীর চিৎকারে-তুমি এদিকে এস। রাহেলা বেগম আহত ভঙ্গীতে ফিরে যান স্বামীর কাছে।

এভাবে আরো মাসখানেক যায়। বাড়ির জায়গা-জমি নিজের সামান্য কিছু সঞ্চয় খরচ করে ওষুধ দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয় রহমান সাহেব কে। আগে তিনি যা হোক হাঁটাচলা করতে পারতেন এখন তিনি সেটুকুও করতে পারেন না। দিহান মাঝে মধ্যে এসে দাদুর পাশে বসে থাকে। দাদুকে ডাকে তার সাথে ঘুরতে যাবার জন্য। কিন্তু দাদু যে আর কখনো উঠতে পারবে না সেটা ছোট্ট দিহান বুঝতে পারে না।

সেদিন রাতের বেলা রহমান সাহেব হঠাৎ প্রচন্ড রকম অসুস্থ হয়ে পড়েন। কি করবে না করবে বুঝতে না পেরে রাহেলা বেগম দৌড়ে যান ছেলের কাছে। প্রচন্ড বিরক্তি নিয়ে হলেও উঠে আসে রাকিব। এ্যাম্বুলেন্স ডেকে নিয়ে বাবাকে ভর্তি করায় অনকোলজী সেন্টারে। ফোন করে রোজাকে। বলে সকালে যেন চলে আসে সে। বাবাকে ভর্তি করিয়ে রেখে রাকিব ফিরে আসে বাসায়। রাহেলা বেগম সারারাত স্বামীর পাশে বসে দোয়া ইউনুস পাঠ করেন। সকালের দিকে রহমান সাহেবের অবস্থা একটু ভাল হয়। ভোরবেলা রোজা, সজল, শারমিন আর রাকিব কে পাশে পেয়ে তিনি যেন একটু খুশী হন।

কয়েকটা দিন কেটে যায় এভাবে। হাসপাতালের দেনা বাড়তে থাকে। প্রথম প্রথম রাকিব নিয়মিত এলেও এখন আর নিয়মিত আসে না। শারমিনও আর নিয়মিত খাবার পাঠায় না। হাসপাতাল থেকে যে খাবার দেয়া হয় সেটা দিয়েই রাহেলা বেগমের চলে যায়। রাহেলা বেগম দেশের বাড়িতে ফোন করেন। সেখানে তার দেবরের ছেলে মতিন কে বলেন বাবা তুই একটু ঢাকায় আয়। বাকি যে জমিটুকু আছে তা বিক্রি করে দে। হাসপাতালের বিল দিতে হবে। আমি তোর চাচাকে নিয়ে বাড়িতে চলে আসব। উনি বোধহয় আর বাঁচবেন না। জীবনের শেষ কয়েকটা দিন বাড়িতেই থাকুক। কিন্তু রহমান সাহেব দেশে ফিরতে চান না। মৃতু্যভয় তাকে আচ্ছন্ন করে রাখে।

রাকিব, শারমিন, দিহান ওদের কোন সাড়া শব্দ পাওয়া যায় না। খোঁজ নিলেই যে চক্ষুলজ্জার খাতিরে হলেও বাবা কে টাকা দিতে হবে। অথবা মায়ের জন্য খাবার পাঠাতে হবে। সেটা তারা ভালোই বোঝে। সব জেনে রাহেলা বেগম চুপ করে থাকেন। হাসপাতাল থেকে যে খাবার দেয় সেটা তিনি খান। কখনো কখনো আত্মীয়-স্বজন কেউ দেখতে আসলে যা নিয়ে আসে তা তিনি কিছুটা খান। কিছুটা রোজাকে দেন। রহমান সাহেব মুখে কিছু খেতে পারেন না। তাকে খাবার, ওষুধ সব কিছু নলের মাধ্যমে খাওয়ানো হয়। আরও তিন-চারটা দিন চলে যায়। একদিন ভোরবেলা হঠাৎ করেই রহমান সাহেব কোমায় চলে যান। ডাক্তার দৌড়ে আসে। সবাই বুঝতে পারে সময় শেষ হয়ে গেছে। রাহেলা বেগম সুরা ইউনুস পড়তে থাকেন স্বামীর মৃতু্যশয্যায়। রোজা দৌড়ে যায় ভাইকে ডাকতে।

তীক্ষ্নস্বরে কলিংবেল বেজেই চলেছে। এত সকালে কে এল? শারমিন চিৎকার করে পিউ ওঠ। পিউ দ্যাখ তো কে এসেছে? পিউ ঘুম ঘুম চোখে দরজা খুলতেই হুড়মুড় করে রোজা ঘরে ঢোকে। কাঁদতে কাঁদতে বলে ভাইয়া, বাবা - - - । কথা শেষ করতে পারে না সে, রাকিব খোলা দরজা দিয়ে দৌড় দেয়। পিউ যেতে চায়। শারমিন ধমকে ওঠে- তুই কোথায় যাচ্ছিস? বুড়োটা মরলেই বাঁচি। যত্তসব ঢং। রোজা ভাবীর দিকে তাকিয়ে শুধু একবার ভাবী বলে ওঠে ঘৃণায়। ততক্ষণে রাকিব দৌড়ে বেরিয়ে গেছে অনেকটা দূরত্ব। রোজাও ভাইয়ের পেছনে পেছনে দৌড় দেয়।

অনকোলজী সেন্টারে ডাক্তার তখন শেষ চেষ্টায় রত। ডাক্তার রহমান সাহেবের বুকে চাপ দেয়। তার মুখ দিয়ে গলগল করে দুর্গন্ধযুক্ত রক্ত বমি বের হয়ে আসে। সম্ভবত লাংগসের কিছুটা অংশও। ক্যান্সারের কাছে তখন তার অসহায় আত্মসমর্পণ।

রাকিব, রোজা ওরা হাসপাতালে পেঁৗছাতে পেঁৗছাতে সব শেষ হয়ে যায়। ওদের কান্নায় ভোরবেলার আকাশ বাতাস ভারী হয়ে যায়। কিন্তু রাহেলা বেগম আশ্চর্য রকম নির্বাক। রহমান সাহেবের চোখে মুখে অদ্ভূত প্রশান্তি। মৃত মুখটা অদ্ভুত রকমের হাসি হাসি। তাকে দেখে মনে হচ্ছে যেন পৃথিবীর সব কষ্টকে ফাঁকি দিয়ে তিনি কী এক অদ্ভুত প্রশান্তির ঘুম ঘুমাচ্ছেন।

রাকিব মায়ের সাথে বাবার লাশ নিয়ে বাড়িতে যেতে চায়। কিন্তু রাহেলা বেগম ছেলেকে ফিরিয়ে দেন। তিনি বলেন মতিন এক্ষুণি চলে আসবে। বেঁচে থাকতে যে মানুষটাকে তোমরা একমুঠো ভাত শান্তিতে খেতে দাওনি, যে মানুষটাকে তোমার ঘাড়ে বোঝা ছিল মৃতু্যর পর অন্তত তাকে তোমরা ক্ষমা করো। আমি চাই না তুমি আমাদের সাথে এস। আমি সারাজীবন তোমার বাবার সাথে ছিলাম মৃতু্যর পরও তোমার বাবার পাশে থাকতে চাই। মতিন তোমার বাবার লাশ নিয়ে যাবে।

'মা, আমাকে তোমার সাথে নিয়ে চল। তুমি ছাড়া আমার আর কেউ নেই মা।-অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে রোজা কথাগুলো বলে। রোজা স্বামী যেমনই হোক স্বামীর ঘর মেয়েদের সবচেয়ে বড় ঠিকানা। তুমি সজলের কাছে ফিরে যাও। আমি তোমাদের সবাইকে মুক্তি দিলাম।

রাহেলা বেগম স্বামীর লাশ নিয়ে এ্যাম্বুলেন্সে করে মতিনের সাথে রওনা দেন গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে। তিনিও আজ তার স্বামীর মতোই সন্তানের ভালবাসা আর পার্থিব ভোগ-বিলাস আর সমস্ত ক্ষুধার উর্দ্ধে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
Shahitaz Aktar Nupur @নিল, গল্প হিসাবে সত্যি অসাধারণ তবে যখন এটা আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি তখন যে যন্ত্রনা paechi তার তুলনা কিসে হবে সেটা আমার জানা নাই.
ভালো লাগেনি ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১১
নিলাঞ্জনা নীল সত্যি অসাধারণ...........
ভালো লাগেনি ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১১
ঝরা বাস্তবতা এখানেই।
ভালো লাগেনি ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১১
মুহাম্মাদ মিজানুর রহমান চরম নিষ্ঠুর কিন্তু বাস্তব দৃশ্যপট, সত্যি আমরা বাবা মায়ের জন্য কে কতটুকুন করেছি বা পেরেছি ? অসাধারণ.....
ভালো লাগেনি ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১১
সূর্য গত সংখ্যায় সময় সল্পতার জন্য আমার প্রায় ২২টা গল্পকবিতা পড়া হয়নি। তার মধ্যে তোমার একটা কবিতি ছিল। এবার পড়ে নিলাম আগেভাগেই। বেশ ভাল লিখেছ, তবে কলেবর আর একটু ছোট হলে নেটে পড়তে সুবিধে। একটা জায়গায় খুব হাসি পেয়েছে: বউকে স্বামী "ফকিরনীর পুত" বলে গালি দিবে কেন? সেটা হওয়া উচিত "ফকিরণীর ঝি" হা হা হা হা। ভোটসহ অনেক শুভকামনা থাকলো
ভালো লাগেনি ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১১
জোড় হস্ত শুরুতে মনে হচ্ছিল সাজানো,গোছানো লেখা,পরে আস্তে আস্তে চরিত্র গুলো দৃশ্যায়িত হতে থাকে চোখের সামনে,(যা একজন লেখকের বড় গুন) প্রতিটি চরিত্রের প্রতি নিরপেক্ষ আচরন লেখাকে করে বাস্তবময়,(শারমিনের চরিত্র নিরপেক্ষতার বড় প্রমান,নারী লেখক হিসেবেও লেখক তার প্রতি পক্ষপাতিত্ত দেখান নি,আবার সজ়ল, রাকিব ও তাই),গল্পের নামকরন গল্পের দিকে পাঠক কে আকর্ষন করার মত।সব মিলিয়ে ভাল কিছু লেখার পরিপূর্ন সামর্থ এই লেখকের আছে।
ভালো লাগেনি ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১১
এফ, আই , জুয়েল # সমাজের খুব গভীর হতে চিন্তার শিকড়ে আশ-পাশের রুপ,রং,গন্ধ,রস চুষে নিয়ে বাস্তবতার আঁলপনায় মনের মাধুরী মেশানো অপূর্ব সুন্দর একটি গল্প ।।
ভালো লাগেনি ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১১
Shahitaz Aktar Nupur @ Azha Bhai, onner lekha golpo pari tabe samoyer ovabe parte parchi na, tabe mon kharap korar kono karon nai. oboshshoi apnader lekha parbo.
ভালো লাগেনি ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১১
Azaha Sultan আপনি তো পাক্বা গল্প লেখক! সহজসরল যদি বলতে হয় ত.....আর কাকে বলা যায়....অসাধারণ লিখছেন......আপনি বোধহয় অন্যের লেখা পড়েন না? নাহয়......
ভালো লাগেনি ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১১

১৮ জুলাই - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৪ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪